সেরা ৫ ভার্চুয়াল ড্রাইভ

তথ্য বহনের ঝামেলা এড়াতে হার্ডড্রাইভের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ভার্চুয়াল স্টোরেজ বা ভার্চুয়াল ড্রাইভ। ইন্টারনেটে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকেই প্রবেশ করা যায় এসব অনলাইন স্টোরেজে।

তথ্য বহনে পেনড্রাইভ কিংবা বহনযোগ্য হার্ডড্রাইভের জনপ্রিয়তার লাগাম টানতে ইতিমধ্যে অনলাইনে আসন গেড়ে বসেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানগুলো কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভের বিকল্প হিসেবে ভার্চুয়াল ড্রাইভ ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে। এক্ষেত্রে বিনামূল্যের পাশাপাশি অধিক মাত্রায় তথ্য সংরক্ষণে রয়েছে অর্থের বিনিময়ে সেবাও। শুধু সংরক্ষণ সেবাই নয়, তথ্য সহজে ব্যবহারের পাশাপাশি নিরাপত্তার বিষয়টিতেও সর্বাধিক নিশ্চয়তা দিচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের ‘গুগল ড্রাইভ’, মাইক্রোসফটের ‘স্কাইড্রাইভ’, অ্যাপলের ‘আইক্লাউড’, অনলাইনে পণ্য বিকিকিনি প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের ‘ক্লাউড ড্রাইভ’ ও ‘ড্রপবক্স’ ইতিমধ্যে তথ্য সংরক্ষণ সেবায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব প্রতিষ্ঠান দুই থেকে ৭ জিবি পর্যন্ত বিনামূল্যে স্টোরেজ সুবিধা দিচ্ছে।
গুগল ড্রাইভ
বাজারে আসতে দেরি হলেও ইতিমধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে গুগলের অনলাইন স্টোরেজ সেবা ‘গুগল ড্রাইভ’। কম্পিউটারের হার্ডড্রাইভের মতো এই সেবা পাওয়া যাবে বলে এর নামকরণ করা হয় ‘গুগল ড্রাইভ’। যঃঃঢ়://ফৎরাব.মড়ড়মষব.পড়স ঠিকানা থেকে এই সেবা পাওয়া যাচ্ছে। গুগল ড্রাইভের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, এটি ‘মাল্টিপল অপারেটিং সিস্টেম, মাল্টিপল ডিভাইস, মাল্টিপল ব্রাউজার’ অর্থাৎ যে কোনো অপারেটিং সিস্টেম ও বিভিন্ন ধরনের পিসি এবং স্মার্টফোন থেকে এই সেবা পাওয়া যাচ্ছে। আপাতত গ্রাহকদের গুগল ড্রাইভে পাঁচ গিগাবাইট অনলাইন স্পেস বিনামূল্যে দিচ্ছে গুগল। তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ মূল্য পরিশোধ করে বাড়তি জায়গা বা অনলাইন স্পেস ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এতে ২৫ গিগাবাইটের জন্য মাসে ২.৪৯ ডলার, ১০০ গিগাবাইটের জন্য মাসে ৪.৯৯ ডলার এবং ১ টেরাবাইটের জন্য মাসে ৪৯.৯৯ ডলার দিয়ে পাওয়া যাবে বাড়তি জায়গা। এখানে সংরক্ষিত ফাইলগুলোকে সহজে অন্যের সঙ্গে শেয়ার করা যায়। সংরক্ষিত বিভিন্ন ফাইল অনলাইনে একাধিক ব্যক্তি মিলে সম্পাদনা করা যায়। এখান থেকে গুগলের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ফাইলটি সহজেই খুঁজে বের করা যায়। ছবি সার্চ করার জন্যও রয়েছে বিশেষ সুবিধা।
আই ক্লাউড
গুগলের মতোই ব্যবহারকারীদের ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস দিতে টেক জায়ান্ট অ্যাপলের রয়েছে ‘আইক্লাউড’। িি.ি ধঢ়ঢ়ষব.পড়স/রপষড়ঁফ ঠিকানা থেকে আইক্লাউডের সেবা পাওয়া যাবে। তবে সেবাটি পেতে ব্যবহারকারীকে অবশ্যই অ্যাপলের কোনো ডিভাইসের ওপর নির্ভর হতে হবে। অর্থাৎ আইক্লাউড কাজ করবে শুধু অ্যাপল ডিভাইসের জন্যই। আইক্লাউডে অ্যাপল ডিভাইসগুলোর জন্য গান, ছবিসহ সব ধরনের ফাইল রাখা যায়। আইওএস ডিভাইসগুলোর জন্য ব্যাকআপও রাখার ব্যবস্থা রয়েছে আইক্লাউডে। এই সেবার মাধ্যমে আইফোন দিয়ে তোলা বা নেওয়া যে কোনো ছবি বা ভিডিও, গান বা কোনো ফাইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে একই গ্রাহকের আইপ্যাড, আইপড, অ্যাপল টিভি সেট আপবক্স বা আইটিউন সেবা সংযুক্ত যে কোনো ব্যক্তিগত কম্পিউটারে জমা হয়ে যাবে। প্রয়োজন অনুসারে পরবর্তীতে মুছে দেওয়া অথবা পরিবর্তন ও করা যাবে। এখানেও বিনামূল্যে ৫ গিগাবাইট অনলাইন স্টোরেজ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত স্টোরেজের জন্য ব্যবহারকারীকে ১০ গিগাবাইটের জন্য ২০ ডলার, ২০ গিগাবাইটের জন্য ৪০ ডলার ও ৫০ গিগাবাইটের জন্য ১০০ ডলার খরচ করতে হবে।
স্কাইড্রাইভ
অনলাইন ক্লাউড স্টোরেজ হিসেবে মাইক্রোসফট সম্প্রতি চালু করে ‘স্কাইড্রাইভ’ সার্ভিসটি। শুরুতে ২৫ গিগাবাইট বিনামূল্যের স্টোরেজ নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে স্কাইড্রাইভে ৭ গিগাবাইট বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়। গুগল ড্রাইভ বা আইড্রাইভের মতো এখানেও যে কোনো ফাইল শেয়ার করার সুবিধা রয়েছে। যে কোনো ডিভাইস এবং অপারেটিং সিস্টেম সমর্থন করে স্কাইড্রাইভ। গুগল ডকের মতো স্কাইড্রাইভে মাইক্রোসফট অফিস সংযুক্ত রয়েছে। ফলে অফিস ফাইলগুলো এতে ব্যবহার অনেক সুবিধাজনক। িি.িংশুফৎরাব.ষরাব.পড়স ওয়েব ঠিকানা থেকে ব্যবহার করা যাবে এই সার্ভিস। সুবিধাটি পেতে মাইক্রোসফটের এমএসএন, হটমেইল বা লাইভ মেইল অ্যাকাউন্ট ঠিকানা ব্যবহার করতে হবে। ফাইল সংরক্ষণ ছাড়াও বড় আকারের ফাইল ই-মেইলের জন্য আশীর্বাদ স্কাইড্রাইভ।
আপলোডের সুবিধার্থে একটি ফাইল সর্বোচ্চ ৫০ মেগাবাইটের হতে পারবে। ৫০ মেগাবাইটের চেয়ে বড় আকারের ফাইল আপলোড করতে হলে ওপরের সিনক্রোনাইজ স্টোরেজ ব্যবহার করতে হবে। বিনামূল্যের ৭ গিগাবাইটের অতিরিক্ত স্পেস ব্যবহার করতে চাইলে কেনা যেতে পারে। এক্ষেত্রে ২০ গিগাবাইট ১০ ডলার, ৫০ গিগাবাইট ২৫ ডলার ও ১০০ গিগাবাইটের জন্য ৫০ ডলার খরচ করতে হবে।
ক্লাউড ড্রাইভ
অনলাইন জায়ান্ট অ্যামাজনেরও ক্লাউড স্টোরেজ সার্ভিস হিসেবে রয়েছে ‘ক্লাউড ড্রাইভ’। গত বছরের ২৯ মার্চ অ্যামাজনের ‘ক্লাউড ড্রাইভ’-এর যাত্রা শুরু হয়। এর মাধ্যমে বিনামূল্যে ৫ গিগাবাইট অনলাইন ক্লাউড স্টোরেজ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে একটি বড় সুবিধা হচ্ছে অ্যামাজন থেকে কেনা গান সংরক্ষণের জন্য অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হবে না। অনলাইনে গান সংরক্ষণের জন্য এটি খুব ভালো একটি সার্ভিস। সংরক্ষণের পর ব্যবহারকারী সংরক্ষিত গানগুলো অ্যামাজন এমপিথ্রি অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে অথবা অ্যামাজন এমপিথ্রি ডাউনলোডারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোনো কম্পিউটারে ডাউনলোড করতে পারবেন। িি.িধসধুড়হ.পড়স/পষড়ঁফফৎরাব ঠিকানা থেকে এই সেবা পাওয়া যায়। শুধু গানেই শেষ নয়, ছবি, ভিডিও এবং বিভিন্ন ধরনের ফাইল সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা যাবে ক্লাউড ড্রাইভে। ব্যবহারকারীর ৫ গিগাবাইটের বেশি অনলাইন স্টোরেজের প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট চার্জ দিয়ে প্রতি এক বছরের জন্য স্টোরেজ কেনা যাবে। এক্ষেত্রে প্রতি ২০ গিগাবাইট ২০ ডলার, ৫০ গিগাবাইট ৫০ ডলার, ১০০ গিগাবাইট ১০০ ডলার, ২০০ গিগাবাইট ২০০ ডলার, ৫০০ গিগাবাইট ৫০০ ডলার ও ১ হাজার গিগাবাইটের জন্য ১ হাজার ডলার পরিশোধ করতে হবে।
ড্রপবক্স
অনলাইন স্টোরেজ হিসেবে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশ আগেই যাত্রা শুরু করে ড্রপবক্স। ২০০৭ সালে ড্রিউ হস্টন ও অরশ ফেরদৌসী নামের দু’জন এমআইটি শিক্ষার্থী একাধিক কম্পিউটার থেকে মেইল ব্যবহারের সুবিধা পেতে এই সেবাটি তৈরি করেন। পরে ফাইল শেয়ারিংয়ের জন্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ড্রপবক্স। উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স, আইফোন, আইপ্যাড, অ্যান্ড্রয়েড এবং ব্ল্যাকবেরিতেও ব্যবহার করা যায় ‘ড্রপবক্স’। এতে অবশ্য বিনামূল্যে ২ গিগাবাইট স্টোরেজ পাওয়া যায়। তবে রেফারেল লিংকের মাধ্যমে অন্য কাউকে এই সেবায় যুক্ত করতে পারলে ৫০০ মেগাবাইট করে স্টোরেজ বাড়ানো যায়। এভাবে বিনামূল্যে ১৮ গিগাবাইট পর্যন্ত জায়গা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট পরিমাণ পরিশোধের মাধ্যমে বাড়তি জায়গা কেনার সুযোগ রয়েছে। এই সেবা পেতে প্রথমে িি.িফৎড়ঢ়নড়ী.পড়স সাইটে নিবন্ধন ও ড্রপবক্স সফটওয়্যারটি ডিভাইসে ডাউনলোড করতে হবে।

Leave a comment